Wednesday, 14 March 2018

খাঁচার পাখি পোষার জরুরী কথা -পাখি পোষার সময় কি কি করা উচিত


আমাদের দেশে বিদেশী খাঁচার পাখি দেখে অনেকেরই মনের সুপ্ত ইচ্ছা জেগে ওঠে । ভাববে এবার তাহলেই বাড়ীতেই খাঁচায় রাখতে পারব এইসব পাখিকে ।যত্ন করতে পারব এবং সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারব । আবার অনেকে বাণিজ্যিক দিক থেকে ভাববে স্বল্প পুঁজিতে একটা ব্যবসা শুরু করা যাবে ।সবই ঠিক কোনটাতেই কোন অসুবিধা নেই । মনে ইচ্ছা থাকলে সব কিছুই করা সম্ভব । পাখি পোষা এবং বাড়ীতে তার বাচ্চা পাওয়ার মধ্যে সত্যিই এক দারুণ আনন্দ আছে । সারা ভারতবর্ষ জুড়ে খাঁচায় প্রজনন করা বিদেশী পাখি কেনা বেচা হয় । কিন্তু একথা সকলের মনে রাখা এবং গর্ব করা উচিত বিদেশী খাঁচার পাখির বাচ্চার জন্মের হার সারা ভারতবর্ষের মধ্যে প্রথম । কিন্তু কয়েকটা কথা অবশ্যয়ই মনে রাখতে হবে পাখি পোষার সময় কি কি করা উচিত , কোনটা করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে । সেগুলি নিচে আলোচনা করা হল –



১। পছন্দের পাখি কিনে বাড়ীতে নিয়ে আসার আগে জানতে হবে পাখির দাম , কি খায় , কি রকম খাঁচায় সেই পাখির উপযুক্ত , কি রকম খাবার খেতে দিতে হবে সেগুলোর নাম এবং কি রকম জায়গায় রাখলে পাখি শারীরিক ভাবে ঠিক থাকবে । এর সব গুলোই যদি ঠিকভাবে করতে পারা যায় তবেই পাখি পোষা উচিত ।
২। যে বা যারা পাখি পুষবেন সারাদিন তিনি কতটা সময় ফাঁকা পান এবং সেই সময়ের মধ্যে পাখির পরিচর্যা সম্পূর্ণ করা সম্ভব কিনা ।
৩। পাখি পোষা মানে সপ্তাহের ৭ দিন , মাসে ৩০ দিন এবং বছরে ৩৬৫ দিন পাখির পরিচর্যা করা ।
৪। বাড়ীতে পাখি আছে অথচ বাড়ীর সকলে ৩-৪ দিনের জন্য বেড়াতে যাবেন তা কিন্তু একেবারেই সম্ভব নয় । এছাড়া পাখিকে বেশী খাবার ও জল দিয়ে দিলেই হবে ভাবলে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বা নোংরা খাবার ও জল খেয়ে পাখি অসুস্থ হতে পারে এমনকি পাখিটি মারা যেতেও পারে ।
৫। পাখিকে খেতে দেওয়ার আগে ভাল করে হাত ধুয়ে নেওয়া উচিত । এমনকি আমার মতে বড় নখের ফাঁকে ময়লা থাকলে তা পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত । এছাড়া রাস্তার জুতো পরে পাখির কাছে যাওয়া একেবারেই উচিত নয়।

৬। পাখির বাসন কখনই সাবান জলে ধোয়া উচিত নয় আর ধুলেও পরিষ্কার গরম জলে নুন দিয়ে খুব ভাল করে ধুয়ে সাবান বের করে দেওয়া উচিত । কেননা সাবান পাখির পেটের পক্ষে ভাল নয় ।
৭। পাখিকে ভুল করে কখন চা , কফি ,চকলেট , দুধ , তৈলাক্ত বা মশলা জাতীয় খাবার একেবারেই দেওয়া উচিত নয় ।

৮।পাখির খাঁচার আশেপাশে ভুল করেও ব্লিচিং পাউডার , কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয় ।
। যদি আগে থেকে কোন পাখি বাড়ীতে থাকে তা হলে পাখিটিকে আলাদা জায়গায় রেখে পর্যবেক্ষণ করা উচিত । এই পর্যবেক্ষণে রাখাকেই  Quarantine বলে ।
১০। পাখিটিকে এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে পাখিটি খুব বেশী ভয় এবং বিরক্ত না হয় ।
১১। পাখি পোষার সময় খাঁচাটিতে অবশ্যই গ্রীট রাখতে হবে ।

১২। রান্নাঘর বা বাথরুমের পাশে খাঁচা রাখা উচিত নয় কেননা রান্নাঘর এবং বাথরুমের বিষাক্ত বাতাস পাখির প্রচুর ক্ষতি করে ।  আবার অনেকে বারান্দায় পাখি রাখতে ভালবাসেন । খুব ভাল জায়গা পাখির পক্ষে । তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে , যাতে সূর্যের রশ্মি (sunrays) সোজা সুজি বেশীক্ষণ অর্থাৎ ২-৩ ঘণ্টা খাঁচায় না পড়ে ।
১৩। আরও একটি জরুরি বিষয় হল পুরো খাঁচাতে যাতে সারাদিন প্রচুর পরিমাণে হাওয়া না থাকে । প্রকৃতির হাওয়া পাখির পক্ষে বিশেষ প্রয়োজন । কিন্তু অতিরিক্ত হাওয়া সারাদিন ধরে পাখিকে অসুবিধায় ফেলে ।
১৪। বন্ধ ঘরে পাখিকে একেবারেই রাখা উচিত নয় । কেননা পাখি তাহলে প্রকৃতির থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ।
১৫। পাখিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং যেখানে গাছপালা বেশী থাকে সেখানেই পাখি পুষলে ভাল ফল পাওয়া যাবে ।
১৬। পাখি পোষার সময় একটা কথা মাথায় রাখতে হবে পাখির ঘরের ভেতরে যাতে বাইরের বাতাস ঢুকে ঘরের আবহাওয়া সুন্দর রাখে তারদিকে নজর রেখে খাঁচাটিকে সেই স্থানে রাখা উচিত ।  
      যে বা যারা পাখি সংখ্যায় কম পুষবেন তাদের ভাল করে পাখিকে দেখা সম্ভব । কিন্তু , যাদের কাছে পাখি সংখ্যায় বেশী  তাদের  রোজ ভাল করে পাখিদের দেখা সম্ভব হয় না –এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। আমার বিশেষ অনুরোধ কেবল পাখিদের ভাল ভাল খাবার দিয়ে চলে যাবেন না , একটু তাদের সঙ্গে থাকুন এবং মন দিয়ে নিজের মত করে দেখুন তাদের আরও একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে পাখি পোষার ক্ষেত্রে যদি সময় না থাকে তাহলে বেশী পাখি রাখবেন না । ঠিক যতগুলি রাখলে তাদের খেতে দেওয়া ছাড়াও একটু সময় দিতে পারবেন ঠিক ততগুলোই পাখি পুষবেন ।
© All Rights Reserved @ pet plus , Unauthorized use or reproduction for any reason is prohibited.

2 comments:

The important thing for pet birds

Many people in our country see the birds of a foreign cage awake. I think we can keep these cages in the house at the same time, and we c...