প্রথমেই দেখতে হবে পছন্দের পাখি কিনে বাড়িতে নিয়ে আসার আগে জানতে হবে পাখির দাম,কি খায় বা কি কি খেতে দিতে হবে সেগুলোর নাম
এবং ঠিক কি রকম খাঁচায় সেই পাখির উপযুক্ত এবং কি রকম জায়গায় রাখলে পাখিটি শারীরিক ভাবে ঠিক থাকবে।এছাড়া পাখিটি পালক ফুলিয়ে আছে কি না।এরপর তার কাছে আস্তে আস্তে গিয়ে দেখতে হবে নাক বা চোখের কাছের পালক ভেজা আছে কিনা।ভেজা থাকলে বুঝতে হবে কোন না কোনভাবে পাখিটি অসুস্থ। এছাড়া পাখির পায়খানা লক্ষ্য রাখতে হবে কেননা পাখির পায়খানা লক্ষ্য রাখলেও বোঝা যায় পাখিটি অসুস্থ কি না।এরপর পাখিটিকে সাবধানে ধরে মলদ্বারের পালক ভিজে কিনা এবং বুকের কাছে মাংসপেশী ঠিক আছে কিনা অর্থাৎ বুকের হাড় সামনের দিকে বেড়িয়ে আছে এমন অনুভূতি হলে বুঝতে হবে পাখিটি অসুস্থ।এরপর দেখা উচিত পাখির ঠোঁট ও নখ,ঠোঁট যদি ছোট বড় বা বাঁকা এবং নখ যদি বড় ও বাঁকা হয় তাহলে পাখিটি অসুস্থ বলে মনে হয়।আবার অনেক সময় লক্ষ্য করলেও তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না যেমন পাখির গায়ের যে কোনও অংশে পালক না থাকা।অবশ্য বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায় ।আবার দেখতে হবে পাখিটি ভয় পায় কি না,ভয় পেয়ে থাকলে তারা কোনভাবেই প্রজনন করবে না ।অবশ্য যদি বাচ্চা পাখি হয় তাহলে তারা এক-জায়গায় থাকতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং চারিপাশের সবকিছু তার কাছে আপন হয়ে যায়।তাই বাচ্চা পাখির ক্ষেত্রে খুব একটা অসুবিধা হয় না। আবার পাখিদের একটা স্বভাব সে অসুস্থ থাকলেও কিছুতেই বুঝতে দেই না যে সে অসুস্থ ,অসুস্থতা বাড়তে যখন পাখিটি নিজেই দুর্বল হয়ে পরে তখন বুঝতে দেয় আমাদের।এতকিছু লক্ষ্য করে তবেই পাখি কেনা উচিত।তবে এটাই সব নয় পাখিটির শরীরের ভেতরে এমন কিছু জীবাণু থাকতে পারে যা খালি চোখে দেখা যায় না .তারজন্য আমাদের কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।যেমন:
জীবাণু মুক্ত করা: প্রথমত,আগে থেকেই যদি বাড়িতে পাখি থাকে তাহলে নতুন পাখিটিকে আলাদা জায়গায় রেখে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।কেননা আমাদের দেশে সেরকম ভাবে কোন পরি-কাঠামো নেই যা পাখিটি ভেতর থেকে সুস্থ অর্থাৎ জীবাণুমুক্ত কিনা বলে দেবে।এই পর্যবেক্ষণে রাখা কেই Quarantine বলে।এই অবস্থায় কিছু কাজ আমাদের করা উচিত।প্রথমত,পাখিটিকে বাড়িতে এনে একটি পরিষ্কার খাঁচায় রাখতে হবে যাতে সে কোনও কিছু থেকে বিরক্ত না হয় বা ভয় না পায়।তাছাড়া খাঁচায় অবশ্যই যেন গ্রীট থাকে।তারপর পাখিটি যাতে সুস্থ থাকে তারজন্য প্রথম ৫ দিন জলে B-Complex মিশিয়ে খেতে দেওয়া উচিত কারণ পাখিটির হজম ক্ষমতা ঠিক রাখতে ও স্নায়ু দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে।তারপর পাখিটিকে Broad spectum antibiotic দিতে হবে কারণ পাখিটি বাইরের দিক থেকে সুস্থ থাকলেও কিছু পরিমাণে জীবাণু থেকে যায় যা পরবর্তীকালে পাখিটির বা অন্যান্য পাখিদেরও ক্ষতি করতে পারে।পাখিটির শরীরে কোনও জীবাণু আছে কিনা তা একমাত্র জানা সম্ভব Laboratory তে ।আমাদের দেশে সেরকম কোন পরি-কাঠামো না থাকায় আমরা পাখিটিকে এমন কোন Antibiotic দেওয়া উচিত যা প্রায় সব রকমের জীবাণু মারতে পারে।জলে গুলে যায় এমন ওষুধ যেমনAmoxicilin পাখিকে দিতে হবে ৫ দিন।তারপর দিতে হবে probiotic নরম খাবারের সঙ্গে।এরপরেও পাখিটি সম্পূর্ণ ভাবে জীবাণুমুক্ত হতে পারিনি কারণ হতে পারে পাখিটির শরীরে কৃমি আছে.এই কৃমি পাখিটিকে অসুস্থ করতে পারে.কৃমির ওষুধ হিসেবে piperzine দিলে ভালো ফল পাওয়া যাবে.কৃমিনাশক ওষুধ দেওয়ার আগে liv52 বা লিভার টনিক দেওয়া যেতে পারে।এরপর ৫ থেকে ৭ দিন পর multivitamin যেমন Recovit ও Vimeral দেওয়া উচিত।এবার বাহ্যিক দিক দিয়ে দেখলে দেখা যায় যেমন পাখির পালকের ভেতরে ভেতরে এমন পোকা বা miteলুকিয়ে থাকে যা পাখির অনেক ক্ষতি করতে পারে।আগেকার দিনে অনেকে পাখিকে হলুদ জলে স্নান করতেন পকের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য।কিন্তু সব পাখিকে হলুদ জলে স্নান করানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই,আমরা শুকনো নিম পাতার গুঁড়ো,হলুদ গুঁড়ো এবং কর্পূর ৬:২:১/২ অনুপাতে মিশিয়ে পাখির গায়ে এবং খাঁচায় ভালো করে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত তাতে পোকার হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা করা যাবে আমাদের ভালবাসার পাখিদেরকে।এরপরই আমরা আশা করতে পারি পাখি মোটামুটি ভাবে জীবাণুমুক্ত।
বন্ধুরা পাখি অসুস্থ কিনা সবসময়ে চোখে দেখে তা বোঝা সম্ভব হয় না।আবার কখনও পাখির শরীরে কোনও জীবাণু থাকলেও সে অসুস্থ হয় না অথচ সেই জীবাণু অনন্যা পাখিকে আক্রমণ করতে পারে।সেই কারণে নতুন কোনও পাখি কিনলে কখনোই তাকে ঘরে আগে থেকে রাখা উচিত নয়।পাখিটিকে জীবাণুমুক্ত করেই অন্য পাখির সংস্পর্শে আনা উচিত।
No comments:
Post a Comment