Tuesday 17 April 2018

পাখি প্রজননের নানা সমস্যা

আমরা প্রত্যেকেই পাখি পুষি সখে কিংবা নেশায়। এই পাখি পোষার পর অনেকেই উৎসাহিত হয়ে পাখির বাচ্চার তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন।আবার অনেকে ব্যবসা ও বাণিজ্যের ভিত্তিতে বাচ্চা তোলার জন্য চেষ্টা করেন। শুধু পাখির বাচ্চা পাওয়ার জন্য কেবল উৎসাহী হলেই চলবে না যিনি যে পাখির বাচ্চা তুলতে আগ্রহী সেই পাখির সম্বন্ধে জানতে হবে। সে কি খায়কি খেতে ভালবাসেকি রকম খাঁচায় থাকে ইত্যাদি এই সমস্ত কিছু জানার পরও দেখা যায় পাখির প্রজননে নানা সমস্যা। সমস্যাগুলি হল সাধারনতঃ 


(ক) পাখি মিলিত (mate) হচ্ছে না :
 (১) জোড়া পাখি দুটির মধ্যে দুজনেই কম বয়সের অর্থাৎ ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত বয়স নয় অর্থাৎ পাখি দুটি adult নয়।
(২) পাখি দুটির মধ্যে দুজনেরই বয়স বেশী।
(৩) পাখি দুটি সঠিক জোড়া নয় অর্থাৎ মাদা পাখি নয়।
(৪) অত্যাধিক ভয় পাচ্ছে বা কোনভাবে বিরক্ত হচ্ছে।
(৫) স্নায়ুতন্ত্রের (nervous system) গণ্ডগোল এবং (৬) প্রজননের জন্য সঠিক পরিবেশ না হলে অর্থাৎ খাঁচা পাখির তুলনায় ছোট ও আলো কম থাকলে এবং তাপমাত্রার অত্যাধিক ওঠানামা বা ভীষণ ঠাণ্ডা বা গরম হলে পাখি মিলিত হয় না ।
(খ) মিলিত হচ্ছে অথচ ডিম পাড়ছে না : মাদা পাখির জননেন্দ্রিয়র (reproductive) কোন গণ্ডগোল থাকলে বা ডিম আটকে গেলে প্রজননের নানা সমস্যা দেখা যায়।
(২) জোড়া পাখি দুটির মধ্যে দুজনের বয়স যদি কম হয় অর্থাৎ পাখি দুটি adult না হলে ।
(৩) ঠিকমতো খাবার না দেওয়ার ফলে অপুষ্টিতে ভুগছে বা পাখিটির শরীরে fat হওয়ার ফলে ডিম পাড়ছে না ।
(গ) ডিম অনুর্বর (infertile)হচ্ছে : (১) জোড়ায় নর পাখি না থাকলে অনেক সময় অনভিজ্ঞতার জন্য নর-মাদার স্থানে দুটি মাদা পাখি থাকলেও ডিম পাড়ে।কিন্তু সেই ডিম সবসময়েই অনুর্বর হয়।
(২) বেশী মাত্রায় বা অনেকদিন ধরে কোন ওষুধ খাওয়ালে 
(৩) স্নায়ুতন্ত্রের গণ্ডগোল থাকলে ডিম অনুর্বর হয়।এবং (৪) খুব বেশী করে ডিম পাড়লে।   
(ঘ) উর্বর ডিম (fertile)কিন্তু বাচ্চা বড় হচ্ছে না : ডিম উর্বর হলেও অনেক সময় দেখা যায় ডিমের ভেতরে বাচ্চা ঠিকমতো বেড়ে ওঠে না কারণ (১)যে পাখি ডিমে তা (incubating) দিচ্ছে সে যদি তার মালিক কিংবা বেড়াল ইঁদুর বা বড় অন্য কোন পাখির দ্বারা বিরক্ত হয় তাহলে বাচ্চা ঠিকমতো বেড়ে উঠতে পারে না ।
(২) খাঁচার চারিদিকে খুব বেশী আওয়াজ হলে।
(৩) ডিমে ঠিকমতো তা না দেওয়ায়  ডিম ঠাণ্ডা হয়ে যায় ।
(৪) ডিমের খোলা ভেঙে গেলে অর্থাৎ পাখির নখের দ্বারা ছোটো ফুটো বা চুলের মত চির ধরে গেলে বাচ্চা বেড়ে ওঠে না । এছাড়াও (৫) নর-মাদার কাছ থেকে আসা সংক্রামক রোগ ভ্রূণকে মেরে ফেলে ।
(ঙ) ডিম ভেঙে দিচ্ছে/ খেয়ে নিচ্ছে   :    ডিম ভেঙে দেওয়ার অন্যতম কারণ হল অত্যাধিক পরিমাণে পাখিটি  বিরক্ত বোধ করলে ।
(চ) পচা ডিম  :  ডিম পচে যাওয়ার অনেক কারণ হতে পারে ।যেমন -  অনুর্বর ডিম যদি পাখি তা (incubating) দেয় তাহলে সেই তা এর তাপমাত্রায় (uncubating temperature )বা সংক্রামক ব্যাধিতে ডিম পচে যেতে পারে । আবার মাদা পাখি ঠিকমতো তা না দিলে ডিমের খোলায় চিড় ধরলেও উর্বর ডিমে ভ্রূণ মরে গিয়ে পচে যেতে পারে ।  
   (ছ) বাচ্চা ডিমের মধ্যে মরে যাচ্ছে   :   মাদা পাখি  ডিমে ঠিকমতো তা না দেওয়ার ফলে ডিম ঠাণ্ডা হয়ে যায় এবং ডিমের খোলায় চিড় ধরায় উর্বর ডিমে ভ্রূণ মরে যায়। এছাড়া আদ্রর্তা (humidity) কমে গেলেও ডিমের মধ্যে ভ্রূণ বা বাচ্চাটি মারা যায় ।  
(জ) বাচ্চা ডিম ভেঙে বেরোতে পারছে না :    অনেক সময় লক্ষ্য করলে দেখা যায় বাচ্চা ডিম ভেঙে বেরোতে পারছে না তার কারণ হল (১) বাচ্চাটি যদি অপুষ্টিজনিত বা কোন বংশগত কারণে দুর্বল হলে । (২) ডিমের খোলা সাধারণের তুলনায় মোটা হলে ।
(৩) তাপমাত্রা খুব বেশী কমে গেলে এবং
(৪) আর্দ্রতা কমে গেলে ।
 (ঝ) দুর্বল বাচ্চা ছোট বেলাতেই মারা যাচ্ছে :  (১)  বাসায় বাচ্চা থাকা অবস্থায় নর মাদা অত্যাধিক বিরক্ত হলে বাচ্চা দুর্বল হয়ে পড়ে ফলে বাচ্চা মারা যায় ।
(২) বাচ্চার উপযোগী খাবার না দিলে এবং (৩) সংক্রামক ব্যাধি হলে বাচ্চা দুর্বল হয়ে পরে ফলে তার মৃত্যু হয় ।  
     তাই পক্ষিপালক বন্ধুরা যে কারণেই পাখি পুষুক না কেন একটি সুস্থ সবল পাখির বাচ্চা পেতে গেলে উপরিউক্ত সমস্যা গুলি যাতে না হয় তারজন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ।

No comments:

Post a Comment

The important thing for pet birds

Many people in our country see the birds of a foreign cage awake. I think we can keep these cages in the house at the same time, and we c...