Friday 30 March 2018

পাখির প্রাথমিক চিকিৎসা-First Aid Box পাখির ঘরে রাখার প্রয়োজনীয়তা

আমরা প্রত্যেকেই  পাখি পুষি সখে আবার কেউ ব্যবসার জন্য।আমরা তাদেরকে দেখি সৌন্দর্য্যে অভিভূত হই,ডাক শুনি ভালোলাগে তাদের সর্বপরি সুস্থ রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু দুঃখের কথা বৈজ্ঞানিক প্রথায় পাখি পোষা আমাদের দেশে এখনো ঠিকমতো শুরু হয়নি.যার ফলে কোনও পাখি অসুস্থ হলে,অসুস্থতা ঠিক কি কারণে তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয় না.তাই অসুস্থ পাখির জন্য ওষুধের প্রয়োগ তো আছেই ,আছে তার শুশ্রূষা ।তাই পাখিকে সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন প্রাথমিক চিকিৎসা.তাই আমরা যারা পাখি পুষি প্রত্যেকের উচিত একটা First Aid Box পাখির ঘরে রাখার-এবং তার প্রয়োজনীয়তা কতখানি জানা .আর এই First Aid box এর মধ্যে কতগুলি সাধারণ  জিনিস থাকে যেমন: (১)ছোট ধারালো ছুরি(২)কাঁচি (৩)নেল কাটার(৪)ছুঁচ(৫) বেটা-ডাইন বা সেভনল (৬)নেই-লকাটার(৭)পেপার টেপ(৮)২৫ ওয়াটের বাল্ব(৯)২%এবং৪%মার্কীয়ক্রম এবং(১০)ডেটল ইত্যাদি ।এই First-Aid Box এর জিনিসগুলি বিভিন্নভাবে পাখির বিপদ থেকে উদ্ধার করা যায়।

বেটা-ডাইন বা সেভনল : কখনও দেখা যায় ডানা থেকে রক্ত পড়ছে জালে আটকে ডানার পালক গোঁড়ার কাছ থেকে ভেঙে গেছে .যে পালকটি ভেঙেছে তার গোঁড়াটিকে ভালোভাবে বেটা-ডাইন বা  সেভনল  দিয়ে পুঁছে দিয়ে ওই স্থানে ২% এবং ৪%মার্কীয়ক্রম  লাগিয়ে দিতে হবে.

নেলকাটার : অনেকসময় পাখিকে দেখা যায় পা তুলে বসে থাকতে বা নখ আটকে জাল থেকে ঝুলে থাকতে,কারণ পাখির বয়স হলে পায়ের নখ বেড়ে যায় .সাবধানে পাখিটিকে ধরে তার পায়ের নখ নেকাটার দিয়ে কেটে দিতে হবে.নখ কাটার সময় একটু সাবধানে কাটতে হবে কারণ বেশী আলোতে পাখির পা কে ধরলে তের নখের ভেতরে যে সরু রক্তের শিরা দেখা যায় ও সেই শিরা যেখানে শেষ হয়েছে তারপর থেকে নখ কাটতে হবে অসাবধানতা বশতঃ কখনও  যদি রক্ত বেরিয়ে আসে আর এই রক্ত সহজে বন্ধ না হলে পাখি মারা যেতে পারে তাই ওই স্থানে সাবান দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘসে দিলে রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে.
ছুঁচ:বেশী রক্তক্ষরণ হলে ছুঁচকে আগুনে লাল করে একটু ছেঁকা দিলেই রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে।আবার অনেক সময় দেখা যায় পাখির বাচ্চার খাদ্য থলিতে খাবার কম অথচ হাওয়া ভর্তি তখন আমাদের একটাই উপায় হলও সবচেয়ে সরু ইনজেকশন এর ছুঁচ দিয়ে হওয়া থলিকে ফুটোকরে হাওয়া বের করে দেওয়া।  

২৫ ওয়াটের বাল্ব: অনেকসময় কোনও পাখিকে পালক ফুলিয়ে চুপ করে বসে থাকতে দেখা যায়, আবার কখনও কখনও পিঠে মুখ গুঁজেও থাকে।এটা পাখির অসুস্থতার লক্ষণ।হতে পারে পাখিটির ঠাণ্ডা লেগেছে,না হলে আবার সংক্রামক রোগও হতে পারে.কারণ পাখিটির সব লক্ষণ দেখা বা বোঝার আগেই তাকে First aid দিয়েই পাখিটিকে সাবধানে ধরে একটি ছোট খাঁচায় রেখে সঙ্গে সঙ্গে ২৫ ওয়াটের বাল্ব জ্বালিয়ে দিতে হবে।
পেপার টেপ: দেখলেই পাখিটিকে ছোট খাঁচার রেখে একদিক বাদ দিয়ে খবরের কাগজ বা পেপার টেপ দিয়ে সব দিক মুড়েদিলে খাঁচার ভিতর গরমে পাখিটি সুস্থ-বোধ করবে।
তুলো ও নিওস্প্রিন : পাখির প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে তুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে.পাখিটি যখন জালে আটকে বা মারপিট করে দানের পালক গোঁড়ার কাছ থেকে ভেঙে যায়,তখন যে পালকটি ভেঙেছে তার গোরাটিকে ভালোভাবে শক্ত করে ধরে ভাঙ্গা পালকটি কে একটানে ছিঁড়ে ফেলতে হবে।যদি দেখা যায় গোরা থেকে রক্ত পড়ছে তখন তুলো নিয়ে আঙ্গুল দিয়ে ১ মিনিট থেকে ২, ৩ মিনিট চেপে ধরলেই রক্ত-বন্ধ হয়ে যাবে এবং সেই ক্ষতস্থানটি তে অল্প পরিমাণে ডেটল তুলোতে নিয়ে আস্তে আস্তে  পরিষ্কার করে নিওস্প্রিন ঔষধ লাগিয়ে দিতে হবে যাতে তাড়াতাড়ি ক্ষতস্থানটি শুকিয়ে যায়।
এছাড়া আর ও অনেক ধরনের first-aidএর প্রয়োজন হয় ,যেমন:শক্তিশালী টর্চ,ফোটানো জল আটা,ছুরি ইত্যাদি.তাহলে পক্ষিপালক বন্ধুরা বোঝা যাচ্ছে আমাদের সুন্দর,চনমনে ,সুস্থ পাখির জন্য first-aid box এর কতটা প্রয়োজন।

Monday 26 March 2018

ককাটেল(Cocakatiels) নর ও মাদা পাখি চেনার উপায়--খাবার--প্রজনন

ককাটেল  এটি একটি অস্ট্রেলিয়ায় কাকাতুয়া পরিবারের সদস্য । যা সাধারণতঃ প্রকৃতিতে ধূসর রং-এর দেখতে পাওয়া যায় । এর বৈজ্ঞানিক নাম হল Nymphicus hollandicness এদের মাথায় ঝুঁটি থাকে বলে অনেকেই ঝুঁটিওয়ালা কাকাতুয়া বলে ভুল করেন ।এর প্রায় ১২’’ বা ৩০ সেন্টিমিটার অবধি লম্বা হয় । বর্তমানে ধূসর রং-এর সাথে সাদা, ফন,পার্ল ইত্যাদি বিভিন্ন রং – এর ককাটেল পাখি জন্ম নেওয়ায় বদ্রিকার মত রাখা না গেলেও পক্ষিপ্রেমী দের কাছে ভীষণ ভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । এদের মাথার দুপাশে গালের কাছে মরচে রং- এর দাগের জন্য দেখতে খুব সুন্দর লাগে ।
খাবার : এই জাতীয় পাখিকে সাধারণতঃ কাঁকর জাতীয় দানার সাথে কিছু অল্প পরিমাণে তৈলাক্ত জাতীয় খাদ্য যেমন সানফ্লাওয়ার সীড , কুসুম দানা , ও ব্ল্যাক সীড মিশিয়ে দেওয়া উচিত । এছাড়া অঙ্কুরিত শস্যদানা যেমন মুগ , গম , ভেজানো ছোলা প্রভৃতি খাবার পাখিকে দিলে পাখির শরীর ও বাচ্চার স্বাস্থ্য ভাল থাকবে ।  আমার মতে মাঝে মাঝে বিনস , বরবটি এবং বিভিন্ন ধরণের সবুজ শাকসবজি দিতে হবে যাতে পাখিরা আনন্দে সেই খাবার দেওয়া উচিত । বদ্রিকা পাখির মত ককাটেল পাখিকেও সারা বছর ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার যেমন সমুদ্রের ফেনা , সন্দধব নুন , এবং সহজে যাতে খাবার হজম করতে পারে তারজন্য সামান্য পরিমাণে কাঠ কয়লা দেওয়া উচিত ।
      
 নর ও মাদা পাখি চেনার উপায় : রং – এর বিভিন্নতা অনুসারে নর ও মাদা পাখিকে চেনা যায় । যেমন – ১। বাচ্চা ককাটেল কে দেখতে রং এর বিভিন্নতা অনুসারে কখন নর – মাদার পাখির মত হয় , তবে সাইজে এরা অনেক ছোট হয় ঠোঁটের রং অনেকটা গোলাপি এবং লেজ ছোট থাকে ।
২। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এদের রং পাল্টাতে থাকে । মোটামুটি ৮-৯ মাস  গায়ের রং ধূসর এবং নর পাখি পূর্ণবয়স্ক হলে মাথায় হলুদ রং-এর জন্য খুব সহজেই চেনা যায় । কিন্তু মাদা পাখির এরকম রং থাকে না ।
৩। ফন রং-এর পাখির ক্ষেত্রে একই রকম ভাবে নর মাদা চেনা যায় ।
৪। পার্ল ককাটেল এর গায়ে গোল গোল কালো রং-এর দাগ নর পাখির মত দেখতে কিন্তু মাদা পাখির গায়ে গোল গোল ছাপ দেখতে পাওয়া যায় 
৫। সব রং-এর ককটেল-এর ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে সব মাদা পাখির লেজের দুই প্রান্তের পালক একটু হলদেটে হয় যা নর পাখির ক্ষেত্রে তা হয় না ।
৬। সাদা রং-এর ককটেল পাখির ক্ষেত্রে নর মাদা চেনা কষ্টকর হলেও গালের দুপাশে যে মরচে রং দেখা যায় তা নর পাখির তুলনায় মাদা পাখির ক্ষেত্রে অনেকটা গাঢ় হয় ।
৭। আমার অভিজ্ঞতায় আরও একটি অন্যতম উপায় হল পাখির ৬ মাসের বেশী বয়স হয়ে গেলে ককটেল পাখির সামনে যদি শিশ দেওয়া হয় তাহলে নর পাখি শিশ দিয়ে ডেকে ওঠে কিন্তু মাদা পাখি তা করে না ।
প্রজনন ককাটেল পাখি Aviary অর্থাৎ পক্ষীশালা বা বড় খাঁচায় একসঙ্গে অনেকগুলি জোড়া রেখে প্রজনন করানো হয় । এই পাখি ১০-১১ মাস বয়সেই পরিণত বা Adult পাখির মত আচরণ করলেও এদের প্রজননের সবথেকে ভাল সময় হল দেড় বছর বা ১৮ মাস । এই ১৮ মাস বয়স হলে বড় চ্যাটালো হাঁড়ি যার ব্যাস হল ১২ইঞ্চি। এই ব্যাসের হাঁড়ি ককটেল পাখির খাঁচায় রেখে দেওয়া উচিত এবং হাঁড়ির  গায়ে আড়াই থেকে তিন ইঞ্চি ব্যাসের ফুটো করে দিতে হয় তারপর এই হাঁড়িটির মাথায় বড় মাটির সরা দিয়ে চাপা দিতে হবে । এই ফুটো দিয়ে পাখির যখন ইচ্ছা প্রবেশ করে এবং যখন ইচ্ছা বাইরে বেরিয়ে আসে । হাঁড়ির ভিতর বাসা করার জন্য কোন উপকরণ লাগে না । মাদা পাখি বদ্রিকা মাদা পাখির মত নিজের পালক মেলে দিয়ে ডিম পাড়ে । বছরে এরা তিনবার ডিম পাড়ে এবং একদিন অন্তর একসঙ্গে ৫-৬ টা ডিম পাড়তে পারে । ১৯-২১ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোয় এবং মাদা পাখি এদের খাওয়ায় । এরপর ৩০-৩৫ দিনের পরে বাচ্চা হাঁড়ি থেকে বেরিয়ে এলে ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত খাওয়ানোর পর এদের আলাদা করতে হয়। অনেকের মতে ককাটেল পাখিকে ১৪-১৫ বছর প্রজনন করতে দেখা গেছে এবং এরা প্রায় ২০ বছর অবধি বাঁচে ।

Monday 19 March 2018

লাভ বার্ড -নর ও মাদা পাখি চেনার উপায় - খাবার - প্রজনন

লাভ বার্ডকে সাধারণতঃ আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এই পাখিকে অনেকটা টিয়া পাখির মত দেখতে হলেও আকার ও পরিণত বয়সের দিক থেকে অনেক ছোট হয় । এরা সারা পৃথিবীতে শুধু জনপ্রিয় হয়ে আছে তা নয় ভালবাসার প্রতীক হিসেবেও পরিচিত । এই লাভ বার্ড প্রধানত তিন ধরণের হয় । যেমন- ১।রোজি লাভ বার্ড বা পীচ ফেসড লাভ বার্ড (Agaparnis nosciollis) ২। মাস্কড লাভ বার্ড(Agapornis personata) এবং ফিসারস লাভ বার্ড (Agapornis fischeri) । এরা প্রত্যেকেই লম্বায় প্রায় সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি বা ১৪ সেন্টিমিটার থেকে ৬ ইঞ্চি বা ১৫ সেন্টিমিটার অবধি হয় । 

      রোজি লাভ বার্ড এর গায়ের রং সবুজ এবং মুখের কাছের রং লালচে হয় । শুধু তাই নয় রং এর দিক থেকে এই রোজি লাভ বার্ডকে অনেক ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন- গায়ের রং নীল বা ব্লু এবং গায়ের রং হলুদ বা লুটিনো রোজি ইত্যাদি । সেইরকম মাস্কড লাভ বার্ড এবং ফিসার লাভ বার্ডেরও রং এর পার্থক্য থাকে । নানা রং-এর মিশ্রণ , ছটপটে স্বভাব ও সহজেই খাঁচায় এরা প্রজনন করায় সারা পৃথিবীতে এদের স্থান অর্জন করে আছে ।
  খাবার লাভ বার্ডকে সাধারণতঃ খাবার হিসেবে কাঁকর জাতীয় দানার সাথে সামান্য তৈলাক্ত জাতীয় খাবার যেমন সানফ্লাওয়ার সীড , কুসুমদানা ও ব্ল্যাক সীড দেওয়া উচিত । সুস্থ ও সবল স্বাস্থ্যের খেয়াল রেখে অঙ্কুরিত শস্য দানা যেমন ভেজানো ছোলা , গম , মুগ ইত্যাদি অল্প পরিমাণে দেওয়া উচিত । এছাড়া সবুজ শাক সব্জি , বরবটি সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন দেওয়া উচিত । এই সমস্ত খাবারের সাথে সাথে কিছু ক্যালসিয়াম , ফসফরাস এবং মিনারেলস জাতীয় খাবার যেমন সমুদ্রের ফেনা ইত্যাদি অবশ্যই রাখা উচিত এবং পাখি অতি সহজেই তাদের খাবার হজম করে নিতে পারে তার জন্য একটি পরিষ্কার কাঠকয়লা ও সন্ধব নুন রেখে দেওয়া উচিত ।

নর ও মাদা পাখি চেনার উপায়  পোষ্য পাখি হিসেবে সারা পৃথিবীতে জনপ্রিয় হলেও নর মাদা চেনার ব্যাপারে সব থেকে অসুবিধায় পড়তে হয় এই লাভ বার্ডকে নিয়ে । অনেকের মতে 
১। মাথার আকারের পার্থক্য অনুযায়ী নর মাদা আলাদা করে চেনা যায় ।
২। আবার অনেকে pelvic bone এর গঠনের পার্থক্য অনুযায়ী নর মাদাকে আলাদা করেন ।কিন্তু অপরিণত বয়সে এই পেলভিক বোনের গঠনগত পার্থক্য বোঝা একেবারেই সম্ভব হয় না । একমাত্র ডিম পাড়ার আগে এই পেলভিক বোনের গঠনগত আকৃতির তফাৎ লক্ষ করা যায় ।
৩। অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চা অবস্থায় এদের গায়ের রং বেশ কিছুটা মা বাবার মতোই হয়। যত পরিণত হতে থাকে রং এর গাঢ়ত্ব ও উজ্জ্বলতা বাড়তে থাকে । এবং
৪। আর ও একটি চেনার উপায় হল ছোট বেলায় বাচ্চা লাভ বার্ডের ঠোঁটের রং একটু কালচে হয় ।

প্রজনন : লাভ বার্ড ৮ থেকে ১০ মাস বয়সেই পরিণত পাখির মত আচরণ করলেও এমনকি কখনও কখনও ডিম পেড়ে ডিমের রক্ষণা বেক্ষনে নিজেদেরকে নিয়োগ করলেও এদের প্রজননের সবথেকে ভাল সময় হল ১৩ থেকে১৪ মাস বয়স ।  বদ্রিকা ককটেলের মত লাভ বার্ডকে পক্ষীশালায় প্রজনন করান যায় না । কারণ এরা শান্ত প্রকৃতির না হওয়ায় বাসা দখলের জন্য এরা প্রচণ্ড মারপিট করে ও একে অন্যকে মেরে ফেলে । এই কারণে ১ জোড়া করে ছোট খাঁচা ২৩’’×১৮’×’১৮’’মাপের খাঁচায় রেখে প্রজনন করলে সুস্থ ও সবল এবং চনমনে পাখির বাচ্চা পাওয়া যাবে । এছাড়া লাভ বার্ডকে বাসার জন্য হাঁড়ি বা কাঠের বাক্স দুই-ই দেওয়া হয় । কলসির আকারে বদ্রিকা পাখির মত একটু বড় হাঁড়ি  লাভ বার্ডের পক্ষে আদর্শ । এই হাঁড়ির গলার কাছাকাছি দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি ব্যাসের গর্ত করে দিতে হয় । ফলে এদের বাইরে ও ভেতরে প্রবেশ করার জন্য কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য বাস্কের মাপ সবদিক থেকে ৬ ইঞ্চির বা ১৫ সেন্টিমিটার করা হয় ।
 এদের বাসা তৈরী করার জন্য উপকরণের প্রয়োজন হয় । অনেকে প্লাই-এর টুকরো আবার অনেকে খেজুর পাতার টুকরোর ব্যবহার করেন । রোজি লাভ বার্ড  তেমনভাবে বাসা না বানালেও ফিসার লাভ বার্ড খুব সুন্দর করে এই উপকরণের সাহায্যে বাসা বানায় । বাসা বানানো শেষ হলে ৫ থেকে ৬ টি ডিম একদিন অন্তর পাড়ে । ২৩ থেকে ২৭ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় । প্রথম দিন থেকে বাচ্চা হাঁড়ির বাইরে বেরনো পর্যন্ত বেশির ভাগ  সময়ই মাদা পাখি বাচ্চাদের খাওয়ায় এবং ৪২ থেকে ৪৫ দিনের পর বাচ্চা হাঁড়ি থেকে বেরিয়ে আসে এরপর ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত মা বাবার কাছে রাখার পর বাচ্চাদের আলাদা করে দিতে হয় । এই লাভ বার্ড প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে । এমনকি ভাল খাবার ও যত্নের ফলে লাভ বার্ডকে ৯ থেকে ১০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রজনন করতে দেখা গেছে ।

Saturday 17 March 2018

পাখি অনুসারে খাঁচার মাপ - বদরী -জেব্রা ফিঞ্চ -লাভ বার্ড -ককটেল -স্টার ফিঞ্চ

পাখির খাঁচা
সারা ভারতবর্ষ জুড়ে খাঁচায় প্রজনন করা বিদেশী খাঁচার পাখি পোষা অনেকদিন ধরে চলে আসছে এবং বর্তমানে তা আরও বিস্তার লাভ করেছে।এই বিদেশী খাঁচার পাখির বাচ্চার জন্মের হার সারা ভারতবর্ষের মধ্যে আমাদের দেশ পশ্চিমবঙ্গ প্রথম।বর্তমানে লোকে যে কেবল সখের জন্য পাখি পুষছে তা নয় ব্যবসায়িক দিক থেকেও এই পাখি পোষা আগের থেকে অনেক বেড়ে গেছে।সারা ভারতবর্ষ জুড়ে খাঁচায় বিদেশী পাখি কেনা বেচা হয়।যে যাই করুক না কেন, পাখিকে রাখতে হবে খাঁচায়।অর্থাৎ পাখি কিনে বাড়িতে আনার আগেই খাঁচার ব্যাবস্থা করে রাখতে হবে।পাখি অনুসারে খাঁচার মাপ হবে বিভিন্ন। আবার খাঁচায় যে জাল থাকবে তার ও বিভিন্ন রকমের মাপ পরিমাপের হয়।

নিয়ম অনুযায়ী খাঁচার দুদিকে জানালা থাকবে একটি ছোট আর অন্যটি বড়।কারণ ছোট দরজা দিয়ে খাবার ও জল দেওয়ার জন্য এবং বড় দরজাটি পাখির ডিম দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যায় ।খাঁচার নুন্যতম মাপ যেমন পাখিটি দাঁড়ে বসে থাকা অবস্থায় পাখিটির লেজ বা মাথা থেকে খাঁচার প্রস্থ মেঝে এবং ছাদ যেন ৬ ইঞ্চির বেশী হয় এবং এক দাঁড় থেকে অন্য দাঁড়ে উড়ে যেতে অন্ততপক্ষে ৫ থেকে ৬ বার ডানা নাড়তে পারে ততটা দৈর্ঘ্য রাখতে হবে। তবে নানা অসুবিধার কথা মাথায় রেখে খাঁচার মাপের নানা পরিবর্তন করা হয়। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে ছোট খাঁচায় পাখি রেখে তাকে ভাল খাদ্য ও আদর্শ পরিবেশ দিলেও পাখিটি বেশীদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারবে না । কেননা খাঁচাটির আকার বিভিন্ন হলেও আয়তকার খাঁচাই পাখির পক্ষে বেশী প্রয়োজন।


 পাখি অনুসারে খাঁচার মাপ(একজোড়া পাখীর জন্য)
পাখি        প্রজননের সময়       সাধারণ সময়
১।বদরী               ১৮’’×১৫’’×১৫’’              ২৪’’×১৫’’×১৫’’
২।জেব্রা ফিঞ্চ           ১৮’’×১২’’×১২’’      ২০’’×১৪’’×১৪’’
৩।লাভ বার্ড          ২৪’’×১৮’’×১৮’’       ৩০’’×১৮’’×২৪’’
৪। ককটেল          ১৮’’×২৪’’×২৪’’          ৩৬’’×১৮’’×২৪’’
৫। স্টার ফিঞ্চ    ১২’’×২৫’’×১৫’’         ২৪’’×১৫’’×১৮’’
                             এই হল খাঁচার মাপ ,পরিমাপ।এরপর দেখতে হবে খাঁচাটি ঠিক কি ধরণের হবে বা তৈরী করা দরকার । প্রথমত, খাঁচা যদি কাঠের কাঠামো হয় তাহলে ছুতোর মিস্ত্রিকে দিয়েই করানো যেতে পারে কিন্তু যদি তারের কাঠামো হয় তাহলে অন্য মিস্ত্রি দিয়ে করাতে হবে। তাই খাঁচা তৈরীর সময় বিশেষ নজর রাখা উচিত দরজার মাপের দিকে।কেননা, ছোট বড় দরজা নিয়ে নানা সময়ে নানা সমস্যায় পরতে হয়।তাই জায়গা অনুযায়ী প্রত্যেকটি খাঁচায় ছোট ও বড় দুটি দরজা করা দরকার।

পাখির জাল –পাখির খাঁচার জাল অনেকসময় নানা ধরণের হয়ে থাকে। যেমন , গোল জাল,চৌক জাল(square net)ঝালাই করা জাল(জয়পুর নেত)ইত্যাদি। এইসব জালের ফাঁকের মাপ এবং যে তার দিয়ে জাল তৈরী হয় সেই তারের মাপও আলাদা হয়। ফলে এর দামও বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে । একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে ছোট পাখি অর্থাৎ ফিঞ্চ জাতীয়, জাভা পাখির জন্য চৌক জাল(square net)এর খাঁচা তৈরী করা উচিত।এই জালের মাপ ১৯ গেজ এর হলেই হয়ে জাবে।কারন এই জালে টিকটিকি,ইঁদুর এরা খাঁচার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে পাখি ও পাখির  বাচ্চা দুজনেই সুস্থ থাকে। ককটেল বা লাভ বার্ড এর জন্য মোটা তারের চৌক জাল ব্যবহার করা দরকার।এই জালের মাপ ১২-১৪ গেজ হলেই ভাল হবে। বর্তমানে জ্বাল বিশেষভাবে তৈরী করা হচ্ছে ।পাখির পায়খানা,খাবারের খোসা বা টুকরো নিচের মাটিতে যাতে পড়ে না যায় তারজন্য খাঁচার মেঝে বা নিচের দিক কিছুটা জাল দিয়ে দেওয়া উচিত ।খাঁচার নিচে সাধারণত: অ্যালুমিনিয়ামের প্লাস্টিক,এসবেস্টস,টিন ইত্যাদি পাতা হয় এটা পাখির পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।তাই পাখির যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেইজন্য খাঁচায় এক বিশেষ ধরণের ব্যবস্থা করা হয়,যাকে tray system বলে।এই পদ্ধতিতে tray টিকে টেনে খাঁচার বাইরে বের করে নেওয়া যায়। এই পদ্ধতিতে খাঁচা বানালে পাখি বিরক্ত হবে না ও অতি সহজে খাঁচা  পরিষ্কার করে নেওয়া যাবে এবং পাখি খাঁচায় সুস্থ ও সরলভাবে বেঁচে থাকবে।

খাঁচায় পাখি ধরার কায়দা-খাঁচায় পাখি ধরার আদব কায়দা নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল

খাঁচায় পাখি ধরার কায়দা
আমরা সকলেই পাখি পুষি , খেতে দিই , ডাক শুনি এবং সৌন্দর্য উপভোগ করি । এছাড়া সময়মত বাসাও দিই ডিম পাড়ার জন্য । কিন্তু একটা প্রশ্ন সকলের মুখেই শোনা যায় এই সমস্ত করব আবার পাখিকে কেন ধরব আর ধরলেও কিভাবে ধরব । পাখি ধরা ব্যাপারটা এরকম মনে হলেও খাঁচায় পাখি পুষলে তাকে ধরতে হয় নানান কারণে । যেমন ধরা যাক একটি খাঁচায় বেশ কয়েকটা পাখি রয়েছে  হঠাৎ দেখা গেল সেই পাখিগুলির মধ্যে একটা পাখিকে সবাই মারছে । তখন আমাদের কি করা উচিত । আমাদের সঙ্গে সঙ্গে পাখিটিকে ধরে আলাদা করে দিতে হবে । আবার কখনও কোন পাখি অসুস্থ হলে তখন তাকে ধরে অন্য খাঁচায় রেখে ওষুধ দিতে হবে । এই রকম অনেক কারণেই পাখিকে ধরতে হয় । অতএব খাঁচায় পাখি ধরার আদব কায়দা নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল –

 ১। আমার অভিজ্ঞতায়  ৩ ফুট লম্বা খাঁচা থেকে বড় aviary পর্যন্ত পাখি ধরার জাল দিয়ে পাখি ধরলে যেমন সুবিধা আছে তেমনি পাখির আঘাত লাগার কোন সম্ভবনা থাকে না । পাখি ধরার জালটি মোটা তারের গোল হাতলওয়ালা কাঠামোয় মশারীর জাল লাগান থাকে । এই জালটি শেষের দিকে সরু হয়ে যায় । ফলে খাঁচার জালে উড়ন্ত পাখিকে ধরলে তার আঘাত লাগে না ।
২।  ৩ ফুটের কম মাপের খাঁচায় পাখি হাত দিয়ে ধরা উচিত । প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হলেও দু-একবার ধরলেই পাখি ধরা সহজ হয়ে যাবে । বেঁকা ঠোঁটের পাখি যেমন বদরী লাভ বার্ড ককটেল ধরার সময় একটু সাবধান হওয়া উচিত ।
৩। খাঁচার ভিতর হাত ঢুকিয়ে যে পাখিকে ধরা হবে তারদিকে হাত বাড়ালেই সে উড়ে জালে বসবে বা মাটিতে বসে যাবে । তখন একটু তাড়াতাড়ি করে তার কাছে হাতটাকে নিয়ে গিয়ে বুড়ো আঙ্গুলের পাশের দুটি আঙ্গুল দিয়ে পাখির শরীরকে চেপে ধরতে হবে । তবে একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে পাখির ঘাড়ের কাছে খুব চেপে ধরলে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যাবে এবং শরীরের ওপর চেপে ধরলে পাখির আঘাত লাগার সম্ভবনা বেশী থাকে ।  

৪।  পাখি যদি মাটিতে বসে তাহলে তাকে তুলে আনা যেতে পারে , কিন্তু যদি সে জালে বসে তাহলে তাকে খুব সাবধানে ধীরে ধীরে জাল থেকে পায়ের নখ এবং ঠোঁট ছাড়িয়ে নিয়ে তবেই তাকে ধরা উচিত ।তা না হলে পাখির নখের বা ঠোঁটে আঘাত লাগতে পারে । এবং
  ৫। আবার ঠোঁট বেঁকা পাখি ধরার সময় যথেষ্ট সাবধান থাকা উচিত তা না হলে বদরী পাখির মত ছোট পাখিও বেশ জোরে কামড়ে দিতে পারে , এমনকি রক্তও বেড়তে পারে । তবে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই । ঠোঁট সরু পাখি ধরতে কোন অসুবিধা নেই । কারণ এই সময় পাখি কামড়ালেও খুব বেশী লাগে না । তবে ঠোঁট সরু পাখি ধরার সময় সাবধানে খুব চেপে ধরা উচিত নয় । এমন ভাবে চাপ দিয়ে ধরা উচিত যে পাখির যেন কোনভাবেই না লাগে এবং ফস্কে পালিয়ে না যায় ।
   উপরিউক্ত পাখি ধরার কায়দাগুলি যত সহজে বলা হল তা কিন্তু অতটা সহজ না হলেও একটু সাহস নিয়ে দু-একবার ধরলেই তা সহজ হয়ে যাবে । আরও একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে পাখিটিকে যতক্ষণ না সঠিকভাবে ধরা হবে ততক্ষণ খাঁচা থেকে তাকে বাইরে বের করা একেবারেই উচিত নয় । আর যদি ঠিকমত না ধরে বাইরে বের করা হয় তাহলে পাখি উড়ে চলে গেলে তাকে ধরা মুশকিল হয়ে যাবে এবং পছন্দের পাখির জন্য আপসোস করলেও কিছু করার থাকবে না । তাই পক্ষী পালক বন্ধুরা উপরিউক্ত আলোচনায় পাখি ধরার কায়দা ও কি করা উচিত তার উপায় গুলি অবলম্বন করলে খুব সহজেই পাখি ধরা যাবে বলে আমার ধারণা ।

Friday 16 March 2018

পায়রা পক্স, বসন্ত বা গুটি (মশার কামর) জনীত রোগের লক্ষণ, ঔষধ ও প্রতিকার।

এখন বসন্তকাল চারদিকে যেমন ফুলের সুবাস, আর সেই সুবাস এর সাথে ঘুরে বেরাচ্ছে মশা এবং রোগের আভাস।
আমরা পায়রা পালকরা সবচেয়ে বেশি মশা এবং গুটি রোগের কারনে অতিষ্ট হয়ে পরছি তাই একটু সমাধানের চেষ্টা।

:- পায়রা পক্স, বসন্ত বা গুটি (মশার কামর) জনীত রোগের লক্ষণ, ঔষধ ও প্রতিকার।

• এই ভাইরাল রোগটি চামড়া অথবা শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি আক্রমণ করে যা
• সাধারণত লালা দিয়ে পাখির মধ্যে বাহিত ।
• ভাইরাস সম্ভবত ভাগ খাদ্য ও জল দিয়ে, চামড়া বা মুখ আস্তরণের মধ্যে মিনিটের বিরতি (প্রায়ই বিন্দুরেখা দ্বারা ঘটিত) মাধ্যমে এন্ট্রি নাফা, বা কামড় দিয়ে মশা দ্বারা বাহিত হতে পারে।
• পায়রার বসন্ত মানুষ সংক্রমিত করতে পারে না।
• Woodpigeons তারা ভাইরাস যুক্ত হলে, বিশেষ করে খারাপভাবে নিপীড়িত হয়।


উপসর্গ/লক্ষণ :

• পাখি ফুট উপর, চোখের চারপাশে, যেমন ঠোঁট হিসাবে unfeathered অংশে scabby বা কর্কশ ক্ষত ('pocks') দেখাতে পারে।
• ঠোঁটের বা গলা গহ্বর মধ্যে canker বলে ভুল হতে পারে, খারাপ গন্ধযুক্ত 'growths' (mucosal ফর্ম হিসাবে পরিচিত) হতে পারে।
• এর বাইরের চামড়া ক্ষত দেখে অনভিজ্ঞ কোন জন বিভ্রান্ত হতে পারেন মুখের মধ্যে ক্ষত খাওয়ানোর বা শ্বাস হস্তক্ষেপ না করলে •.

চিকিৎসা

• কোন বিরোধী ভাইরাল চিকিৎসা আছে নাই।
• ভিটামিন এ ত্বকের ক্ষত নিরাময় উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে।
• হোমিও Antimonium tartaricu 3x or Antimonium crudum 3x (অরিজিনাল জার্মান বিটি) সম্ভব হলে 3 ড্রপ প্রতি 3 ঘন্টা পর পর অথবা 3 বার ১ দিন
দিতে পারেন।
• অথবা হোমিও Rhus Tox 3x (অরিজিনাল জার্মান বিটি) সম্ভব হলে 3 ড্রপ প্রতি 3 ঘন্টা পর পর অথবা 3 বার ১ দিন দিতে পারেন।
• হোমিও Borax 30 (মৌলিক জার্মান বিটি) মাসিক একবার প্রয়োগ করুন. (পানীয় জল 1 লিটার 1 সিসি) এটি সংক্রামক রোগের কোনো ধরনের সংক্রমিত হতে
রক্ষা করতে পারে।
• বসন্তের উপর Povisef / Potas / Savlon ক্রিম বা যে কোন এন্টিসেপটিক ক্রিম বা Viola 2% (মানুষের) প্রয়োগ করতে পারেন।
• Reboflabin / Rebson 1 টি ট্যাব একটি দিন।
• অন্য কোন ভিটামিন দিবেন না।
• দৈনন্দিন এন্টি জীবাণু স্প্রে করুন বা কমপক্ষে 2 বার সপ্তাহে ।
• নিম পাতার পেস্ট ভাল প্রতিকার করতে পারে।
• অত্যধিক ক্ষেত্রে (মিশ্রণ ইনজেকশন শুধুমাত্র 12 ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করুন) 3 -4 দিন এ Sk CEP ইনজেকশন 500 (অথবা Sephrodhine গ্রুপ) ১ সিসি
দিনে 2 বার প্রয়োগ করুন।
• মুখ ভিতর ক্ষত মুছে ফেলার প্রচেষ্টা করবেন না - তারা আসলে ত্বক outgrowths হয় - এই মারাত্মক রক্তক্ষরণের কারণ হতে পারেন।

• কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ রোগ নিয়ন্ত্রণ ভ্যাকসিন এর উপর নির্ভর করতে উপদেশ দেন কিন্তু ভ্যাকসিন এক্ষেত্রে কোন কার্যকর ভুমিকা রাখে না।

 প্রতিরোধ :-
• কঠোর স্বাস্থ্যবিধি আনুসরন।
• মশা নিয়ন্ত্রণ করুন কারন এটি একটি বড় সমস্যা পায়রার জন্য, মশা প্রতিরোধ ছাড়া পক্স নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় ।

::-  পরিশেষে, একটা কথা ভাল করে মনে রাখা প্রয়োজন যে, পক্স/বসন্ত যেহেতু একটি ভাইরাল রোগ তাই, যে যাই বলুন না কেন অ্যান্টিবায়োটিক দ্বারা এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব নয় এবং এটি কোন উপকারেও আসে না। তাই শুধু শুধু আপনার পায়রার উপর বাড়তি চাপ দিবেন না অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে।

পাখির খাঁচা কোথায় রাখা উচিত - পাখির খাঁচাটিকে রাখার জন্য প্রয়োজন একটি আদর্শ পরিবেশের

খাঁচা কোথায় রাখা উচিত
প্রত্যেকেই পাখি পোষেন সখে ,কেউ তার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে,গান শুনতে আবার কেউ ব্যবসার জন্য।যে যাই করুক না কেন পাখিকে রাখতে হবে খাঁচায় ।অর্থাৎ পাখি কিনে আনার আগেই বাড়িতে খাঁচার ব্যাবস্থা করে রাখতে হবে । পাখি পোষা এবং তার বাচ্চা পাওয়ার মধ্যে সত্যিই এক দারুণ সুন্দর আনন্দ আছে। খাঁচা কোথায় রাখা উচিত কোথায় রাখা উচিত নয় সেই সব নিয়ে অনেকে নানা কথা বলেন।তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার খাঁচায় পাখি রেখে তাকে ভালো ভালো খাদ্য  দিলেই পাখিটি যে সুস্থভাবে বেঁচে থাকবে তা কিন্তু নয়।তাই পাখির খাঁচাটিকে রাখার জন্য প্রয়োজন একটি আদর্শ পরিবেশের।এই আদর্শ পরিবেশে কিছু  সুবিধা অসুবিধা ও আছে ।তাই খাঁচাটি কোথায় রাখা উচিত তা নিচে আলোচনা করা হল ।
   (১)  প্রথমেই মনে রাখতে হবে পাখির খাঁচাটিকে এমন ভাবে রাখতে হবে প্রকৃতির সঙ্গে তাঁদের সোজাসুজি বা Direct contact থাকে ।তা বলে এই নয় যে সূর্যের রশ্মি বা বৃষ্টি সোজাসুজি তাদের গায়ে সবসময় এসে পরে।এমন ভাবে ব্যবস্থা করতে হবে জাতে পাখিরা নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী আরামে থাকতে পারে।
 (২)খাঁচাটি এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে সবসময় ভেতরের দূষিত হাওয়া বেরিয়ে গিয়ে বাইরের পরিষ্কার হাওয়া প্রবেশ করতে পারে।  যেমন বাথরুম বা রান্নাঘরের পাশে খাঁচা রাখা কখনই উচিত নয় । কারণ রান্নার এবং বাথরুমের বিষাক্ত বাতাস পাখির প্রচুর ক্ষতি করে।
(৩)আবার অনেকে বারান্দায় পাখি পোষেন,খুব ভালো জায়গা পাখির পক্ষে,কিন্তু দেখে নিতে হবে যাতে সূর্য রশ্মি(sun rays)সোজাসুজি বেশীক্ষণ অর্থাৎ( ২ থেকে ৩ ঘণ্টার বেশী) খাঁচায় যেন না পড়ে ।আর এই  সূর্যরশ্মি পাখির যে রোজ পছন্দ হবে তা কিন্তু নয় , তারজন্য খাঁচার একটি দাঁড়ার দিকে যাতে ভালোমতো ছায়া থাকে তার ব্যবস্থা করতে হবে,যাতে  সে ছায়ায় গিয়ে বসতে পারে । 
(৪)প্রকৃতির হাওয়া বাতাস পাখির পক্ষে বিশেষ প্রয়োজন ।কিন্তু অতিরিক্ত হাওয়া বাতাস সারাদিন ধরে অসুবিধায় না ফেলে এবং প্রকৃতির পাখি যেমন কাক,চড়াই পাখির থেকে রক্ষা করতে পারে তারদিকে নজর দিতে হবে।কেননা এরা নানা ধরনের রোগ তো নিয়ে আসে আবার হঠাৎ করে খাঁচার ওপরে এসে বসে ফলে খাঁচায় থাকা পাখি আক্রমণের ভয় পেয়ে জায়।পাখিটি যাতে ভয় না পায় তাই সে দিকে ভীষণভাবে নজর দিতে হবে এইসব অসুবিধাগুলো তা না হলে আদরের ও ভালোবাসার এবং সখের পাখি বেশীদিন সুস্থ থাকতে পারবে না।তাই পাখির খাঁচাটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জাইগায় রাখা উচিত।
(৫)আমরা যারা পাখি পুষি তাদের মধ্যে অনেকে  পাখির জন্য আলাদা ঘর তৈরী করেন ,তাদের খাঁচা রাখার কোনও অসুবিধা হয় না বরং সুবিধাই হয়।কারণ পাখির জন্য ঘর তৈরী করলে তা সবদিক বিবেচনা করেই করা হয়।
(৬)ঘরের আয়তন অনুযায়ী খাঁচার ওপর খাঁচা রেখে বা লম্বায় একই কাঠামোয় অনেকগুলো খোপ করে সুবিধা মতো সাজানো যেতে পারে।আবার একেবারেই বন্ধ ঘরে খাঁচাটি রাখা উচিত নয়,কারন তারা প্রকৃতির থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ফলে সেখানে হাওয়া বাতাস কোনকিছুই প্রবেশ করতে পারবে না।তাই যেখানে হাওয়া বাতাস থাকবে সেখানেই খাঁচা রাখা উচিত ।
(৭)এমন জায়গায় খাঁচাটি রাখতে হবে যেখানে সবসময়ে বাইরের কোন ব্যক্তি যাতে পাখির ঘরে ঢুকতে না পারে ,সর্বোপরি পাখির খাঁচাটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গায় রাখা উচিত এবং পাখির ঘরের ভেতরে যাতে বাইরের বাতাস ঢুকে ঘরের আবহাওয়া সুন্দর রাখে তার দিকে নজর রেখে খাঁচাটিকে সেইস্থানে রাখা উচিত ।
(৮)পাখির যাতে ক্ষতি না হয় এমন যে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে টিকটিকি,ইন্দুর,মাছি পোকা প্রভৃতির থেকে দূরে রাখতে হবে খাঁচাটিকে।কারণ এরা নানা ধরণের রোগের জীবাণু বহন করে অথচ তাদের কিছুই হয় না ।কিন্তু এদের সংস্পর্শে এলে খাঁচায় রাখা পাখির মারাত্মক রোগ হতে পারে।সেই কারণেই এদের খাঁচার মধ্যে ঢোকা বা কাছে আসাকে যে করেই হোক বন্ধ করতে হবে এবং খাঁচাটিকে একটি পরিষ্কার জায়গায় রাখতে হবে। 
                                                       

বদ্রিকা পাখির নর ও মাদা পাখি চেনার উপায়- বদ্রিকা পাখির খাবার -প্রজনন

বদ্রিকা কথাটি এসেছে ইংরেজি শব্দ Budgerigar থেকে । এর বৈজ্ঞানিক নাম হল Melopsittacus  Undulatus । ১৮৪০ সালে এক পক্ষিপ্রেমী অস্ট্রেলিয়া থেকে ইংল্যান্ডে প্রথম বদ্রিকা পাখিকে নিয়ে আসেন । এই বদ্রিকা পাখিটি উচ্চতা প্রায় ৭ ইঞ্চি বা ১৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয় এবং গায়ের রং সবুজ ও হলুদের সংমিশ্রণ । ১৮৭০ সালে খাঁচায় প্রজনন করে প্রথম হলুদ রঙের বদ্রিকা পাখি হয় এবং চোখের রং হয় লাল । এরপর ধীরে ধীরে সাদা , নীল , বেগুনী ইত্যাদি রং এর বদ্রিকা পাখি জন্ম নেয়। খুব সহজেই এই পাখি পরিবেশকে মানিয়ে নিতে পারে এবং ছটপটে স্বভাবের হওয়ার ফলে পৃথিবীতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ।


  বদ্রিকা পাখির খাবার  পাখিকে সুস্থ ও সবল রাখার জন্য সুষম খাবারের সাথে সাথে calcium , vitamin , minarels  জাতীয় খাবার দেওয়া উচিত । সাধারণত: বদ্রিকা পাখিকে কাঁকর জাতীয় দানা যুক্ত খাবার দেওয়া হয় । শুধু তাই নয় amino acid যা পাখির শরীরে প্রয়োজন তা অঙ্কুরিত শস্য যেমন ভেজানো ছোলা , ভুট্টা ,মুগ ইত্যাদি শস্যদানায় তৈরী হয় যা পাখির শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । এছাড়া অল্প পরিমাণে তৈলাক্ত জাতীয় খাবার যেমন ব্ল্যাক সীড , সানফ্লাওয়ার সীড মাঝে মাঝে দিলে এরা স্বাস্থ্যের দিক থেকে খুব ভাল থাকে । শস্যদানার সাথে সাথে বদ্রিকা পাখির খাঁচায় সবসময়ের জন্য একটি সমুদ্রের ফেনার টুকরো   (cuttle fish bone) এবং একটি পরিষ্কার কাঠ কয়লা রেখে দিতে হবে যা হজমে সাহায্য করবে এবং যে খাবার গুলি থেকে প্রচুর পরিমাণে মিনারেলস পাওয়া যাবে সেই রকম খাবারের টুকরো পাখির খাঁচায় রেখে দিতে হবে ।

নর ও মাদা পাখি চেনার উপায় : ১। ছোট বদ্রিকা পাখির নাকের ওপর থেকে ঘাড় পর্যন্ত আড়াআড়ি ভাবে পালকে দাগ থাকে । যত বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই দাগ ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় ।
 ২। ছয় মাস পর্যন্ত এই দাগ দেখা যায় ।
৩। সব রকমের বদ্রিকা পাখির কম বয়সে পাখির চোখ পুরোপুরি কালো বা লাল রং-এর হয় । বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের মণির চারপাশে সাদা গোলাকার দাগ দেখতে পাওয়া যায় ।
৪। নর ও মাদা পাখি চেনার আর একটি উপায় হল বাচ্চা পাখির নাকের ফুটোর চারপাশের রং সাদাটে হয় ।
৫। পূর্ণ বয়স্ক বদ্রিকা নর পাখির নাকের ফুটোর চারপাশের রং নীল হয় । অবশ্য সম্পূর্ণ সাদা বা হলুদ রং-এর বদ্রিকা নরের নাকের রং হাল্কা বেগুনী হয় ।
৬। আর ও একটি অন্যতম উপায় হল বয়স বাড়ার সাথে সাথে এবং নর-মাদা অনুসারে রং পাল্টাতে থাকে ।
৭। অন্যদিকে সব রং-এর পূর্ণ বয়স্ক মাদা পাখির নাকের রং খয়েরী হয় ।



প্রজনন : একজোড়া  বদ্রিকা পাখির প্রজননের সময় খাঁচার মাপ ২০’’×১৫’’×১৫’’ হবে এবং সাধারণ সময়ের ক্ষেত্রে ২৪’’×১৫’’×১৫’’ এই পরিমাপের হওয়া প্রয়োজন ।খাঁচায় বদ্রিকা পাখি অতি সহজেই ডিম পাড়ে । সাধারণত: বদ্রিকা পাখি ৮ থেকে ১০ মাস বয়সে প্রজননে সক্ষম হয় । খাঁচা ছাড়াও কলসির আকারে ছোট হাঁড়িতে এদের ডিম পাড়ার জন্য আদর্শ জায়গা বলে আমার ধারণা । কেননা এরা সহজে নিজের খুশি মত ঢুকতে এবং বেরোতে পারবে । এই হাঁড়ির মাপ সাধারণত: হাঁড়ির গলার ঠিক তলায় দেড় ইঞ্চি থেকে দুই ইঞ্চি ব্যাসের গর্ত করে দেওয়া হয় । এই হাঁড়িতে বাসা করার জন্য কোন  উপকরণের প্রয়োজন হয় না কারণ মাদা পাখি ডিম পাড়ার আগে নিজের পেটের তলা থেকে পালক তুলে হাঁড়ির ভেতর মিলে দেয় । প্রজননের আগে পাখিকে যে সমস্ত খাবারের প্রয়োজন হয় তা সঠিক পরিমাণে দিলে পাখি সুস্থ থাকে এবং সুস্থ বাচ্চার জন্ম দেবে । এরা নিজেদের মত ডিম পাড়ার জন্য হাঁড়ি বেছে নিয়ে একসঙ্গে প্রায় ৫-৬ টি ডিম পাড়ে এবং ১৮-২১ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোয় । প্রথম কয়েকদিন মাদা পাখিকে বাচ্চাকে খাওয়াতে দেখা যায় । এই সময়ে বাচ্চা ও মা পাখিকে একটু করে ভাত , ভেজানো চিঁড়ে এবং অঙ্কুরিত শস্যদানা যেমন ভেজানো ছোলা , মুগ , গম ইত্যাদি খাবার দিলে মা ও বাচ্চা সুস্থ থাকবে । ঠিক মত খাবার পেলে বদ্রিকা পাখি ৭ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে এবং ৯ মাস থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত প্রজনন করতে পারে ।

Thursday 15 March 2018

পাখির গ্রীট্ এর প্রয়োজনীয়তা বা কেন লাগে-গ্রীট্ এর কাজ

গ্রীট
আমাদের দেশে যে বা যারা পাখি পোষেন তাদের মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন থেকে যায় পাখির কি গ্রীটে্র প্রয়োজন আছে।শুধু তাই নয় ,এ নিয়ে প্রচুর মতভেদ ও আছে ।কিছু পাখি সংক্রান্ত ম্যাগাজিনে বলতে দেখা গেছে যারা পাখি পোষেন তাদের পাখি বহু বছর সুস্থ সবল থাকে গ্রীট ছাড়াই। আবার অনেকে বলেছেন পাখির জন্য গ্রীটে্র প্রয়োজনও আছে।যাইহোক,আমার মনে হয় গ্রীট কি,কি কাজে লাগে,এর সুবিধা অসুবিধা কি হতে পারে পাখিকে দিলে,এবং দিলেও দেওয়া উচিত না অনুচিত ,আবার দিলে কতটা দিতে হবে তার মোটামুটি একটা ধারণা করা যেতে পারে।
       গ্রীট্ বলতে সাধারণত কাঁকর, পাথরের শক্ত কণিকা সমূহ,বালি এবং পাথরের কুচি প্রভৃতিকে বোঝায়গ্রীট্ প্রাথমিকভাবে খনিজও বালি ভূমির উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়।গ্রীট এখানে grinding এর কাজ করে। গ্রীটে্র সাহায্যে পাখির খাদ্য থলিতে থাকা শস্যদানার খোসা ছেড়ে যায় এবং শস্যদানার ভেতরের অংশও কোন কোন সময়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তখন digestive enzyme এর কাজে সুবিধা হয়। গ্রীট্কে প্রধানত: দুভাগে ভাগ করা যায়। (১) অদ্রবণীয়(insoluble) এবং (২) দ্রবণীয় (soluble)
 অদ্রবণীয় গ্রীট্ (insoluble): পাথরের ছোট ছোট টুকরোই হল অদ্রবণীয় গ্রীট্। যা পাখির শরীরে ভেতরে হজম হতে পারেনা।এই গ্রীট্ পাখির শরীরে থেকে যায় এবং অবশেষে মল মূত্রের সাথে বেরিয়ে জায়। যেমন বালি, বেলে পাথরের টুকরো।
 দ্রবণীয় গ্রীট্ (soluble): দ্রবণীয় গ্রীট হল জৈবিক পদার্থ। যেমন সমুদ্রের ফেনা,ঝিনুকের গুঁড়ো, ইত্যাদি। এই ধরনের গ্রীট্ পাখির শরীরে জমা হলে কোন ক্ষতি না করে acid-এ হজম হয়ে জায়। দ্রবণীয় গ্রীট্ প্রধানত: পাখির শরীরে calcium –এর জোগান দেয়। তবে অবশ্যই এই গ্রীট্ ব্যবহারের আগে ভাল করে হাত ধুয়ে দেওয়া উচিত। তা না হলে নোংরা দূষিত জায়গা থেকে আনা হলে পাখির শরীরে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে।
গ্রীট্ এর কাজ : (১) খোসা সমেত শস্যদানাকে হজম করতে গ্র্র্রীট্ পাখিকে সাহায্য করে।  
(২) পাখির শরীরে হজম কারক রস (digestive enzymes) শস্যদানার খোসার ভিতরের অংশের ওপর খুব সহজেই কাজ করতে পারে ।
পাখির গ্রীট্ এর প্রয়োজনীয়তা বা কেন লাগে :  যে সমস্ত পাখি খোসা সমেত শস্যদানা যেমন ঘুঘু, মুরগি,পায়রা ইত্যাদি তাদের গ্রীট্ লাগবেই। কিন্তু, অনেকের মতে,Parrot, Parakeet এবং Finch জাতীয় পাখির গ্রীটে্র দরকার হয় না।কিন্তু , আমার মতে (১) সব পাখিকে গ্রীট্ দেওয়া উচিত তবে দ্রবণীয় গ্রীট্। কারণ দ্রবণীয়গ্রীট্ পাখির শরীরে acid –এ গলে যায় ফলে আভ্যন্তরীণ কোন অংশে আটকে গেলে কোন অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে না ।
(২) যদি অদ্রবণীয় গ্রীট্ হয় তাহলে তা finch পাখির জন্য। ১-২ মিলিমিটার ব্যাসের এবং বড় পাখির জন্য ২-৫ মিলিমিটার মাপের হতে হবে,তা না হলে অনেকগুলি অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে।
পাখির গ্রীট্ : পক্ষিপালক বন্ধুরা আমরা পাখি পোষার যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি সেখানে বড় এবং ভাল কোন সংস্থা দায়িত্বের সঙ্গে সঠিক মাপের অদ্রবণীয় গ্রীট্ তৈরী সম্ভব নয়।তাই পাখির যাতে ভালো হয় তারজন্য মোটামুটি একটা গ্রীট্ তৈরী করা যেতে পারে। যেমন
(১)  মোটা দানা বালি ১ কিলো ।
(২) সমুদ্রের ফেনা ৭০০ গ্রাম।
(৩) ঝিনুকের গুঁড়ো ৪০০ গ্রাম।
(৪) সন্দক নুন ৫০ গ্রাম।
(৫) বিট নুন ৫০ গ্রাম। এবং
(৬) কাঠ কয়লা ২০০ গ্রাম। একটা কথা অবশ্যই মনে রাখা দরকার যে , কাঠ কয়লা কেনার সময়ে সবথেকে হাল্কা ধরণের কিনতে হবে। কেননা কাঠ কয়লা হজমের কাজে সাহায্য করলেও আবার বেশী কাঠ কয়লা খেয়ে ফেললে শরীরে vitamin A,B12 এবং এর অভাব দেখা দেবে।তাই গ্রীটে্ কাঠ কয়লা মাসে একবার ব্যবহার করাই ভাল।

পাখির বাচ্চার খাবার -সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

পাখির বাচ্চার খাবার

আমরা প্রত্যেকেই জানি পৃথিবীতে সমস্ত প্রাণীদের দেহ লক্ষ লক্ষ কোষ (cell)দিয়ে গঠিত । আর এই কোষ তৈরী হওয়ার জন্য যা প্রয়োজন তা হল প্রোটিন , কার্ব হাইড্রেট , ফ্যাট , ভিটামিন এবং মিনারেলস এর সঠিক ভাগ । এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রোটিন । পাখিকে শস্যদানার সাথে সাথে আমরা অনেক রকম নরম খাবার দিই যেমন ভাত , চিঁড়ে , ডিম সিদ্ধ , ছোলা , মুগ , ভুট্টা প্রভৃতি । বদ্রিকা , ককটেল টেল , লাভবার্ড ইত্যাদি পাখিদের অঙ্কুরিত খাদ্য এবং তার বাচ্চাকে নরম খাবার দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়। অনেকের ধারণা বাচ্চাকে নরম খাবার খাওয়াতে পাখি মা-বাবার সুবিধা হয় । কিন্তু কেবল সুবিধা দেখলে হবে না দেখতে হবে সেই খাবার সুষম কিনা অর্থাৎ পাখির বাচ্চার বেড়ে ওঠায় তা কতটা  সাহায্য করে । অবশ্য শুধু ভাত , চিঁড়ে , বিস্কুটের থেকে ভেজানো ছোলা ইত্যাদি অনেক উপকারী । আবার তার থেকে উপকারী ডিম সিদ্ধ । কেবল পাখির বাচ্চার জন্য নয় adultপাখিকেও নিয়মিত নরম খাবার দেওয়া উচিত ।

  পাখি বা তার বাচ্চার সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে এবং বেড়ে উঠতে গেলে প্রয়োজন সুষম balanced  খাবার যা তারা সহজে হজম করে শরীরের কাজে লাগাতে পারে । আমার মতে যে কোন অঙ্কুরিত শস্য এমন এক সুষম খাবার যার মধ্যে Protine  , Vitamin ,Minarels , Enzyme (হজম কারক রস) এমন সুন্দর ভাগে থাকে যা পাখিদের যে কেবল খেতে ভাল লাগে তা নয় , তাদের শরীরকে সুস্থ  ও সবল রাখতে এবং জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে । আমরা পাখিকে যে সমস্ত খাদ্যশস্য খেতে দিই সেইসব খাদ্যশস্য ভিজিয়ে অঙ্কুরিত করলে তারমধ্যে এসবের পরিমাণ বেশ কিছুটা বৃদ্ধি পায় । শুধু তাই নয় বেশ কিছু amino acide যা পাখির প্রয়োজন এবং এমন কিছু এনজাইম তৈরী হয় যা হজমে সাহায্য করে ।

অঙ্কুরিত খাবার


 আমরা যে সমস্ত খাদ্যশস্য অঙ্কুরিত করতে পারি সেগুলি হল ১। চীনা বাদাম ২। ব্ল্যাক সীড ৩। সানফ্লাওয়ার সীড ৪।সরষে ৫। ছোলা ৬। মুগ ৭। মুসুর ৮। ভুট্টা ৯। গম প্রভৃতি ।

 কি করে অঙ্কুরোদগম করা যায় :-

প্রথমে হাল্কা গরম জলে যে খাদ্যশস্য কে অঙ্কুরোদগম করা হবে তাকে ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে । কেননা কোন ধরণের পোকা মারার ওষুধ দেওয়া থাকলে তা বেরিয়ে যায় ।এরপর একটা বড় কানা উঁচু থালায় জেল রেখে তার মধ্যে একটা ছোট পাত্র রাখতে হবে । সেই ছোট পাত্রের মধ্যে একটা সুতির কাপড় রাখতে হবে যার চারিধার থালার জলের মধ্যে ডুবে থাকবে । ভেজানো শস্য এই কাপড়ের মধ্যে অঙ্কুরোদগম হচ্ছে দেখা যাবে । এই অবস্থায় ভাল করে ধুয়ে যে কোন ধরণের পাখিকে খেতে দেওয়া যেতে পারে ।  
  এছাড়া এই অঙ্কুরিত শস্যকে জৈবসার দেওয়া মাটিতে দিয়ে আলোতে রেখে রোজ একটু করে জল দিলে ৫-৭ দিনের মধ্যে দেখা যাবে ছোট ছোট সবুজ পাখির দিলে অঙ্কুরিত শস্যের সঙ্গে সঙ্গে নিজের হাতে তৈরী কীটনাশক মুক্ত সবুজ খাদ্য ও পাখিকে দিতে পারা যাবে । এছাড়া পাখিরা সবুজ দেখে মনের আনন্দে খাবে এবং তারা শারীরিক ভাবে প্রভূত উন্নতি হচ্ছে ।

নরম খাবার

 আমরা যে সমস্ত নরম খাবার পাখির বাচ্চা কে দিই সেগুলি হল (ক) ১। এক কাপ ভাত ২। গাজর ১ ইঞ্চি ৩। পেঁপে ।
     এই খাবার বানানোর পদ্ধতি হল - ১ ইঞ্চি মাপের গাজর নিয়ে প্রথমে তার ওপরের খোসা ছুরি দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে হবে । এরপর গাজরটিকে কুচি কুচি করে কেটে ফুটন্ত গরম জলে ফেলে দিতে হবে । ২-৩ মিনিট পরে জল থেকে ছেঁকে নিয়ে ঠাণ্ডা করতে দিতে হবে । এরপর পেঁপের টুকরোটি নিয়ে ছোট ছোট করে কাটতে হবে খোসা সমেত । তারপর এই গাজর ও পেঁপের টুকরো ভাতের সঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে ।
(খ) ১। ৩-৪ কাপ চিঁড়ে ২। ১ টা সিদ্ধ ডিম ৩। ১/২ কাপ অঙ্কুরিত ছোলা , গোটা মুগ ইত্যাদি । ৪। যে কোন শাকের ১০-১২ টি পাতা ।
  পদ্ধতি – চিঁড়ে খুব ভাল করে ধুয়ে তার মধ্যে ১ কাপ ফুটন্ত গরম জল ঢেলে দিতে হবে । এরপর ১৫-২০ মিনিট ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করার জন্য ঠাণ্ডা জলে ফেলে দিতে হবে । ডিম ঠাণ্ডা হলে খোলা grater এ ঘষলে ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুম সরু সরু টুকরোয় পরিণত হবে । এরপর অঙ্কুরিত ছোলা বা গোটা মুগ থেঁতো করে নিতে হবে এবং শাকের পাতাগুলি কুচি কুচি করে কেটে চিঁড়ে , ডিম , শাক , ছোলা বা মুগ এর সঙ্গে একসাথে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে । তাহলেই সুস্বাস্থ্য সুষম নরম খাবার পাখির জন্য তৈরী হয়ে যাবে ।
(গ) ১। দুটো ডিম সিদ্ধ ২। চারটি থিন এরারুট বিস্কুট ৩। দেড় ইঞ্চি গাজর এবং ৪। ২ ইঞ্চি- আড়াই ইঞ্চি খোসা সমেত পেঁপে ।
 পদ্ধতি – প্রথমে ডিম দুটোকে ১৫-২০ মিনিট সিদ্ধ করে ঠাণ্ডা করার জন্য তুলে রেখে দিতে হবে । বিস্কুট গুলোকে হাতে মিহি করে গুঁড়ো করে নিতে হবে । এরপর গাজরের টুকরোটি ও পেঁপের টুকরোটিকেও grater এ ঘসে ফুটন্ত গরম জলে ২-৩ মিনিট রেখে ভাল করে ছেঁকে নিতে হবে । এরপর সিদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়িয়ে ডিমটিকেও grater এ ঘসে নিতে হবে । তারপর ঘসা ডিমের মধ্যে বিস্কুটের গুঁড়ো গাজর ও পেঁপে দিয়ে কাঁটা চামচ দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে ।
(ঘ) ১। দেড় কাপ মোটা চিঁড়ে ২। ১ টা সিদ্ধ ডিম এবং ৩। তরকারীর-খোসা ।
 খাবার বানানোর পদ্ধতি – চিঁড়ে ভাল করে ধুয়ে তাতে ফুটন্ত গরম জল দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে । ডিমটি ভাল করে সিদ্ধ করে নিয়ে তারপর তরকারীর খোসা ভাল করে ধুয়ে প্রেসার কুকারে সিদ্ধ করে নিয়ে সুতির কাপড়ে ছেঁকে নিতে হবে। এরপর ভেজানো চিঁড়ে এবং ডিম সিদ্ধ grater এ ঘসে একসঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে দিলেই তৈরী হয়ে যাবে বাচ্চার সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর নরম খাবার ।
   এইরকম অনেক ধরণের পুষ্টিকর নরম খাবার ও অঙ্কুরিত খাদ্যশস্য পাখির ও বাচ্চার জন্য বানান যেতে পারে এবং এর সাথে সবরকম শাক যেমন- কলম, পালং , থানকুনি,তুলসী ইত্যাদি অল্প পরিমাণে মেশানো যেতে পারে । আমার মতে অঙ্কুরিত শস্য মিশিয়ে দেওয়া যায় । কিন্তু ফিঞ্চ বা স্প্যারো জাতীয় পাখির জন্য থেঁতো করে দেওয়ায় ভাল ফল পাওয়া যাবে ।
     আশাকরি এই পদ্ধতিতে সঠিক খাবার প্রয়োগ করলে পাখি মা-বাবার শরীর এবং বাচ্চার লালন পালনে কোন অসুবিধা হবে না বা শরীরে যে ক্ষয় হয় তা রোধ করা সম্ভব । 

The important thing for pet birds

Many people in our country see the birds of a foreign cage awake. I think we can keep these cages in the house at the same time, and we c...