Friday 16 March 2018

বদ্রিকা পাখির নর ও মাদা পাখি চেনার উপায়- বদ্রিকা পাখির খাবার -প্রজনন

বদ্রিকা কথাটি এসেছে ইংরেজি শব্দ Budgerigar থেকে । এর বৈজ্ঞানিক নাম হল Melopsittacus  Undulatus । ১৮৪০ সালে এক পক্ষিপ্রেমী অস্ট্রেলিয়া থেকে ইংল্যান্ডে প্রথম বদ্রিকা পাখিকে নিয়ে আসেন । এই বদ্রিকা পাখিটি উচ্চতা প্রায় ৭ ইঞ্চি বা ১৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয় এবং গায়ের রং সবুজ ও হলুদের সংমিশ্রণ । ১৮৭০ সালে খাঁচায় প্রজনন করে প্রথম হলুদ রঙের বদ্রিকা পাখি হয় এবং চোখের রং হয় লাল । এরপর ধীরে ধীরে সাদা , নীল , বেগুনী ইত্যাদি রং এর বদ্রিকা পাখি জন্ম নেয়। খুব সহজেই এই পাখি পরিবেশকে মানিয়ে নিতে পারে এবং ছটপটে স্বভাবের হওয়ার ফলে পৃথিবীতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ।


  বদ্রিকা পাখির খাবার  পাখিকে সুস্থ ও সবল রাখার জন্য সুষম খাবারের সাথে সাথে calcium , vitamin , minarels  জাতীয় খাবার দেওয়া উচিত । সাধারণত: বদ্রিকা পাখিকে কাঁকর জাতীয় দানা যুক্ত খাবার দেওয়া হয় । শুধু তাই নয় amino acid যা পাখির শরীরে প্রয়োজন তা অঙ্কুরিত শস্য যেমন ভেজানো ছোলা , ভুট্টা ,মুগ ইত্যাদি শস্যদানায় তৈরী হয় যা পাখির শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । এছাড়া অল্প পরিমাণে তৈলাক্ত জাতীয় খাবার যেমন ব্ল্যাক সীড , সানফ্লাওয়ার সীড মাঝে মাঝে দিলে এরা স্বাস্থ্যের দিক থেকে খুব ভাল থাকে । শস্যদানার সাথে সাথে বদ্রিকা পাখির খাঁচায় সবসময়ের জন্য একটি সমুদ্রের ফেনার টুকরো   (cuttle fish bone) এবং একটি পরিষ্কার কাঠ কয়লা রেখে দিতে হবে যা হজমে সাহায্য করবে এবং যে খাবার গুলি থেকে প্রচুর পরিমাণে মিনারেলস পাওয়া যাবে সেই রকম খাবারের টুকরো পাখির খাঁচায় রেখে দিতে হবে ।

নর ও মাদা পাখি চেনার উপায় : ১। ছোট বদ্রিকা পাখির নাকের ওপর থেকে ঘাড় পর্যন্ত আড়াআড়ি ভাবে পালকে দাগ থাকে । যত বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই দাগ ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় ।
 ২। ছয় মাস পর্যন্ত এই দাগ দেখা যায় ।
৩। সব রকমের বদ্রিকা পাখির কম বয়সে পাখির চোখ পুরোপুরি কালো বা লাল রং-এর হয় । বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের মণির চারপাশে সাদা গোলাকার দাগ দেখতে পাওয়া যায় ।
৪। নর ও মাদা পাখি চেনার আর একটি উপায় হল বাচ্চা পাখির নাকের ফুটোর চারপাশের রং সাদাটে হয় ।
৫। পূর্ণ বয়স্ক বদ্রিকা নর পাখির নাকের ফুটোর চারপাশের রং নীল হয় । অবশ্য সম্পূর্ণ সাদা বা হলুদ রং-এর বদ্রিকা নরের নাকের রং হাল্কা বেগুনী হয় ।
৬। আর ও একটি অন্যতম উপায় হল বয়স বাড়ার সাথে সাথে এবং নর-মাদা অনুসারে রং পাল্টাতে থাকে ।
৭। অন্যদিকে সব রং-এর পূর্ণ বয়স্ক মাদা পাখির নাকের রং খয়েরী হয় ।



প্রজনন : একজোড়া  বদ্রিকা পাখির প্রজননের সময় খাঁচার মাপ ২০’’×১৫’’×১৫’’ হবে এবং সাধারণ সময়ের ক্ষেত্রে ২৪’’×১৫’’×১৫’’ এই পরিমাপের হওয়া প্রয়োজন ।খাঁচায় বদ্রিকা পাখি অতি সহজেই ডিম পাড়ে । সাধারণত: বদ্রিকা পাখি ৮ থেকে ১০ মাস বয়সে প্রজননে সক্ষম হয় । খাঁচা ছাড়াও কলসির আকারে ছোট হাঁড়িতে এদের ডিম পাড়ার জন্য আদর্শ জায়গা বলে আমার ধারণা । কেননা এরা সহজে নিজের খুশি মত ঢুকতে এবং বেরোতে পারবে । এই হাঁড়ির মাপ সাধারণত: হাঁড়ির গলার ঠিক তলায় দেড় ইঞ্চি থেকে দুই ইঞ্চি ব্যাসের গর্ত করে দেওয়া হয় । এই হাঁড়িতে বাসা করার জন্য কোন  উপকরণের প্রয়োজন হয় না কারণ মাদা পাখি ডিম পাড়ার আগে নিজের পেটের তলা থেকে পালক তুলে হাঁড়ির ভেতর মিলে দেয় । প্রজননের আগে পাখিকে যে সমস্ত খাবারের প্রয়োজন হয় তা সঠিক পরিমাণে দিলে পাখি সুস্থ থাকে এবং সুস্থ বাচ্চার জন্ম দেবে । এরা নিজেদের মত ডিম পাড়ার জন্য হাঁড়ি বেছে নিয়ে একসঙ্গে প্রায় ৫-৬ টি ডিম পাড়ে এবং ১৮-২১ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোয় । প্রথম কয়েকদিন মাদা পাখিকে বাচ্চাকে খাওয়াতে দেখা যায় । এই সময়ে বাচ্চা ও মা পাখিকে একটু করে ভাত , ভেজানো চিঁড়ে এবং অঙ্কুরিত শস্যদানা যেমন ভেজানো ছোলা , মুগ , গম ইত্যাদি খাবার দিলে মা ও বাচ্চা সুস্থ থাকবে । ঠিক মত খাবার পেলে বদ্রিকা পাখি ৭ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে এবং ৯ মাস থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত প্রজনন করতে পারে ।

No comments:

Post a Comment

The important thing for pet birds

Many people in our country see the birds of a foreign cage awake. I think we can keep these cages in the house at the same time, and we c...