পাখির খাঁচা
সারা ভারতবর্ষ জুড়ে খাঁচায় প্রজনন করা বিদেশী খাঁচার পাখি পোষা অনেকদিন ধরে চলে আসছে এবং বর্তমানে তা আরও বিস্তার লাভ করেছে।এই বিদেশী খাঁচার পাখির বাচ্চার জন্মের হার সারা ভারতবর্ষের মধ্যে আমাদের দেশ পশ্চিমবঙ্গ প্রথম।বর্তমানে লোকে যে কেবল সখের জন্য পাখি পুষছে তা নয় ব্যবসায়িক দিক থেকেও এই পাখি পোষা আগের থেকে অনেক বেড়ে গেছে।সারা ভারতবর্ষ জুড়ে খাঁচায় বিদেশী পাখি কেনা বেচা হয়।যে যাই করুক না কেন, পাখিকে রাখতে হবে খাঁচায়।অর্থাৎ পাখি কিনে বাড়িতে আনার আগেই খাঁচার ব্যাবস্থা করে রাখতে হবে।পাখি অনুসারে খাঁচার মাপ হবে বিভিন্ন। আবার খাঁচায় যে জাল থাকবে তার ও বিভিন্ন রকমের মাপ পরিমাপের হয়।
নিয়ম অনুযায়ী খাঁচার দুদিকে জানালা থাকবে একটি ছোট আর অন্যটি বড়।কারণ ছোট দরজা দিয়ে খাবার ও জল দেওয়ার জন্য এবং বড় দরজাটি পাখির ডিম দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যায় ।খাঁচার নুন্যতম মাপ যেমন পাখিটি দাঁড়ে বসে থাকা অবস্থায় পাখিটির লেজ বা মাথা থেকে খাঁচার প্রস্থ মেঝে এবং ছাদ যেন ৬ ইঞ্চির বেশী হয় এবং এক দাঁড় থেকে অন্য দাঁড়ে উড়ে যেতে অন্ততপক্ষে ৫ থেকে ৬ বার ডানা নাড়তে পারে ততটা দৈর্ঘ্য রাখতে হবে। তবে নানা অসুবিধার কথা মাথায় রেখে খাঁচার মাপের নানা পরিবর্তন করা হয়। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে ছোট খাঁচায় পাখি রেখে তাকে ভাল খাদ্য ও আদর্শ পরিবেশ দিলেও পাখিটি বেশীদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারবে না । কেননা খাঁচাটির আকার বিভিন্ন হলেও আয়তকার খাঁচাই পাখির পক্ষে বেশী প্রয়োজন।
পাখি অনুসারে খাঁচার মাপ(একজোড়া পাখীর জন্য)
পাখি প্রজননের সময় সাধারণ সময়
১।বদরী ১৮’’×১৫’’×১৫’’ ২৪’’×১৫’’×১৫’’
২।জেব্রা ফিঞ্চ ১৮’’×১২’’×১২’’ ২০’’×১৪’’×১৪’’
৩।লাভ বার্ড ২৪’’×১৮’’×১৮’’ ৩০’’×১৮’’×২৪’’
৪। ককটেল ১৮’’×২৪’’×২৪’’ ৩৬’’×১৮’’×২৪’’
৫। স্টার ফিঞ্চ ১২’’×২৫’’×১৫’’ ২৪’’×১৫’’×১৮’’
এই হল খাঁচার মাপ ,পরিমাপ।এরপর দেখতে হবে খাঁচাটি ঠিক কি ধরণের হবে বা তৈরী করা দরকার । প্রথমত, খাঁচা যদি কাঠের কাঠামো হয় তাহলে ছুতোর মিস্ত্রিকে দিয়েই করানো যেতে পারে কিন্তু যদি তারের কাঠামো হয় তাহলে অন্য মিস্ত্রি দিয়ে করাতে হবে। তাই খাঁচা তৈরীর সময় বিশেষ নজর রাখা উচিত দরজার মাপের দিকে।কেননা, ছোট বড় দরজা নিয়ে নানা সময়ে নানা সমস্যায় পরতে হয়।তাই জায়গা অনুযায়ী প্রত্যেকটি খাঁচায় ছোট ও বড় দুটি দরজা করা দরকার।
পাখির জাল –পাখির খাঁচার জাল অনেকসময় নানা ধরণের হয়ে থাকে। যেমন , গোল জাল,চৌক জাল(square net)।ঝালাই করা জাল(জয়পুর নেত)ইত্যাদি। এইসব জালের ফাঁকের মাপ এবং যে তার দিয়ে জাল তৈরী হয় সেই তারের মাপও আলাদা হয়। ফলে এর দামও বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে । একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে ছোট পাখি অর্থাৎ ফিঞ্চ জাতীয়, জাভা পাখির জন্য চৌক জাল(square net)এর খাঁচা তৈরী করা উচিত।এই জালের মাপ ১৯ গেজ এর হলেই হয়ে জাবে।কারন এই জালে টিকটিকি,ইঁদুর এরা খাঁচার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে পাখি ও পাখির বাচ্চা দুজনেই সুস্থ থাকে। ককটেল বা লাভ বার্ড এর জন্য মোটা তারের চৌক জাল ব্যবহার করা দরকার।এই জালের মাপ ১২-১৪ গেজ হলেই ভাল হবে। বর্তমানে জ্বাল বিশেষভাবে তৈরী করা হচ্ছে ।পাখির পায়খানা,খাবারের খোসা বা টুকরো নিচের মাটিতে যাতে পড়ে না যায় তারজন্য খাঁচার মেঝে বা নিচের দিক কিছুটা জাল দিয়ে দেওয়া উচিত ।খাঁচার নিচে সাধারণত: অ্যালুমিনিয়ামের প্লাস্টিক,এসবেস্টস,টিন ইত্যাদি পাতা হয় এটা পাখির পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।তাই পাখির যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেইজন্য খাঁচায় এক বিশেষ ধরণের ব্যবস্থা করা হয়,যাকে tray system বলে।এই পদ্ধতিতে tray টিকে টেনে খাঁচার বাইরে বের করে নেওয়া যায়। এই পদ্ধতিতে খাঁচা বানালে পাখি বিরক্ত হবে না ও অতি সহজে খাঁচা পরিষ্কার করে নেওয়া যাবে এবং পাখি খাঁচায় সুস্থ ও সরলভাবে বেঁচে থাকবে।
No comments:
Post a Comment